(সুরা জ্বিন : ২৬-২৮ : শেষপর্ব) : আল্লাহ তাঁর গায়েবী বিষয়ের জ্ঞান কারো কাছে (ভবিষ্যঁৎবক্তা কিংবা পীর-ফকির) প্রকাশ করেন না..

Tafhimul Quran on Wednesday, January 19, 2011 at 8:42pm

26. তিনি গায়েবী বিষয়ে জ্ঞানের অধিকারী। তিনি তাঁর গায়েবী বিষয়ের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। ২৬





২৬ )অর্থাৎ গায়েবী বিষয়ের সবটুকু জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। গায়েবী বিষয়ের এ পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান তিনি কাউকেই দেন না।



27. তবে যে রসূলকে (গায়েবী বিষয়ের কোন জ্ঞান দেয়ার জন্য) মনোনীত করেছেন ২৭ তাকে ছাড়া। তিনি তার সামনে ও পেছনে প্রহরী নিয়োজিত করেন। ২৮ 




২৭ )অর্থাৎ রসূল নিজে "আলেমুল গায়েব" বা গায়েবী বিষয়ে জ্ঞানের অধিকারী নন। বরং আল্লাহ তা"আলা যখন তাকে রিসালাতের দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার জন্য মনোনীত করেন তখন তিনি ইচ্ছামত তাঁকে অদৃশ্য বস্তুসমূহের জ্ঞান দান করেন।


২৮ )প্রহরী মানে ফেরেশতা। অর্থাৎ আল্লাহ তা"আলা যখন অহীর মাধ্যমে গায়েবী বিষয়ের গভীর জ্ঞান ও তাৎপর্য তাঁর রসূলের কাছে পাঠান তখন তার রক্ষণাবেক্ষণ ও পাহারাদারীর জন্য সবখানে ফেরেশতা মোতায়েব করেন । যাতে সে জ্ঞানটি অত্যন্ত সুরক্ষিত পন্থায় রসূলের কাছে পৌছতে পারে এবং তার মধ্যে বাইরের কোন কিছু সংমিশ্রন হতে না পারে। ওপরে ৮ও ৯ নং আয়াতে একথাটিই বলা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত প্রাপ্তির পর জিনরা দেখলো তাদের উর্ধ জগতে প্রবেশের সব পথ বন্ধ। তারা দেখলো সব জায়গায় কঠোর প্রহরা বসানো হয়েছে যার কারণে ছিটে ফোঁটা কিছু আভাস লাভের সুযোগও তাদের নষ্ট হয়ে গিয়েছে।


28. যেন তিনি নিশ্চিতরূপে জানতে পারেন যে,রসূলগণ তাদের রবের বাণীসমূহ পৌঁছিয়ে দিয়েছেন ২৯ তিনি তাদের গোটা পরিবেশ সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবহিত। আর তিনি প্রতিটি জিনিস গুণে গুণে হিসেব করে রেখেছেন। ৩০





২৯ )এর তিনটি অর্থ হতে পারে।

এক, রসূল নিশ্চিতভাবে জানবেন যে, ফেরেশতারা তাঁর কাছে আল্লাহ তা"আলার বাণীসমূহ ঠিক ঠিক পৌছিয়ে দিয়েছে ।

দুই, আল্লাহ তা"আলা জানবেন যে, ফেরেশতারা তাদের রবের বাণীসমুহ তাঁর রসূলের কাছে সঠিকভাবে পৌছিয়ে দিয়েছে ।

তিন, আল্লাহ তাআলা জানবেন যে রসূলগণ তাঁদের রবের বাণীসমূহ তাঁর বান্দাদের কাছে ঠিকমত পৌছিয়ে দিয়েছেন।

আয়াতটির শব্দমালা এ তিনটি অর্থেরই ধারক। অসম্ভব নয় যে,এখানে যুগপৎ এ তিনটি অর্থই বুঝানো হয়েছে। এ ছাড়াও আয়াতটির আরো দু"টি অর্থ হয়।

প্রথমটি হলো রিসালাতের দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার জন্য রসূলের যতটুকু "ইলমে গায়েব" বা অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান দান করা জরুরী ততটুকু জ্ঞান দান করা।

দ্বিতীয়টি হলো, যেসব ফেরেশতাকে প্রহরা কাজে নিয়োজিত করা হয় তারা রসূল পর্যন্ত সুরক্ষিত পন্থায় অহী পৌছে যাওয়ার ব্যাপারটুকুই শুধু তত্বাবধান করেন না বরং রসূল তাঁর রবের বাণীসমূহ তাঁর বান্দাদের কাছে যাতে পুরোপুরি পৌছিয়ে দিতে পারেন তার তত্বাবধানও করে থাকেন।



৩০ )অর্থাৎ আল্লাহর ক্ষমতা রসূল ও ফেরেশতা উভয়কে এমনভাবে পরিব্যাপ্ত করে আছে যে, তারা যদি তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে চুল পরিমাণ কাজও করেন তাহলে সংগে সংগে পাকড়াও হবেন। আর যে বাণীসমূহ আল্লাহ পাঠান তার প্রতিটি বর্ণ গোণা ও হিসেব করা। তার একটি বর্ণের হ্রাস-বৃদ্ধি করার ক্ষমতাও রসূল বা ফেরেশতা করো নেই।

No comments:

Post a Comment