(সুরা জ্বিন : ১৯-২৫) : 'আর আল্লাহর বান্দা যখন তাঁকে ডাকার জন্য দাঁড়ালো তখন তারা সবাই তার ওপর হামলা করতে উদ্যত হলো'..

19.) আর আল্লাহর বান্দা ২০ যখন তাঁকে ডাকার জন্য দাঁড়ালো তখন তারা সবাই তার ওপর হামলা করতে উদ্যত হলো।


২০ )এখানে আল্লাহর বান্দা অর্থ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

20.) হে নবী, বলো "আমি শুধু আমার রবকেই ডাকি এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করি না। ২১

<span> </span>

২১ )অর্থাৎ আল্লাহকে ডাকা এমন কোন আপত্তিকর কাজ নয় যার জন্য মানুষ এতটা রাগান্বিত ও উত্তেজিত হয়ে পড়বে। তবে কেউ যদি আল্লাহর সাথে তাঁর প্রভুত্ব ও উলুহিয়্যাতের ব্যাপারে কাউকে শরীক করে তাহলে তা নিসন্দেহে খারাপ। আর এ কাজ আমি করিনি। বরং যারা আল্লাহর নাম শুনে আমার ওপর হামলা করতে চায় তারাই এ কাজ করেছে।

21.) বলো,"আমি তোমাদের কোন ক্ষতি করারও ক্ষমতা রাখি না, উপকার করারও না।


22.) বলো,আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউ আমাকে বাঁচাতে সক্ষম নয় এবং তাঁর কাছে কোন আশ্রয়ও আমি পাব না।

<span> </span>

23.) আল্লাহর বাণী ও হুকুম-আহকাম পৌঁছিয়ে দেয়া ছাড়া আমার কাজ আর কিছুই নয় । ২২ এরপর যারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কথা অমান্য করবে তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন। এ ধরনের লোকেরা চিরকাল সেখানে থাকবে । ২৩

<span> </span>

২২ )অর্থাৎ আমি কখনো এ দাবী করি না যে, আল্লাহর প্রভুত্বে আমার কোন দখলদারী বা কর্তৃত্ব আছে। কিংবা মানুষের ভাগ্য ভাঙা বা গড়ার ব্যাপারে আমার কোন ক্ষমতা আছে ।আমি তো আল্লাহর একজন রসূল মাত্র। আমার ওপর যে কাজের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে তা তোমাদের কাছে আল্লাহ তা"আলার বাণী পৌছিয়ে দেয়ার অধিক আর কিছুই নয়। আল্লাহর ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ব্যাপার তো পুরোপুরি আল্লাহরই করায়ত্ব । অন্য কারো কল্যাণ বা ক্ষতি সাধন তো দূরের কথা নিজের ক্ষতি ও কল্যাণের ব্যাপারটিরও আমার নিজের ইচ্ছাধীন নয়। আমি যদি আল্লাহর নাফরমাণী করি তাহলে তাঁর পাকড়াও থেকে আত্মরক্ষা করে কোথাও আশ্রয় লাভ করতে পারবো না। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে ছাড়া আমার আর কোন আশ্রয়স্থল নেই।(অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমূল কোরআন, সূরা আশ্ শূরা ,টীকা ৭)

২৩ )এর অর্থ এই নয় যে, প্রতিটি গোনহ ও অপরাধের শাস্তিই হচ্ছে চিরস্থায়ী জাহান্নাম। বরং যে প্রসংগে একথাটি বলা হয়েছে তার আলোকে আয়াতের অর্থ হলো আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে তাওহীদের যে আহবান জানানো হয়েছে তা যে ব্যক্তি মানবে না এবং শিরককেও বর্জন করবে না তার জন্য অবধারিত আছে জাহান্নামের চিরস্থায়ী শাস্তি।

24.) (এসব লোক তাদের এ আচরণ থেকে বিরত হবে না) এমনকি অবশেষে যখন তারা সে জিনিসটি দেখবে যার প্রতিশ্রুতি তাদের দেয়া হচ্ছে, তখন তারা জানতে পারবে যে, কার সাহায্যকারী দুর্বল এবং কার দল সংখ্যায় কম । ২৪

<span> </span>

২৪ )এ আয়তটির পটভূমি হলো, সে যুগে যেসব লোক আল্লাহর পথের দিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আহবান শুনেই তাঁর ওপর মারমুখী হতো তারা এ খোশ খেয়ালে নিমগ্ন ছিল যে, তাদের দলবলই বড়।অপরদিকে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে আছে আঙুলে গোণা কয়েকজন লোক। সুতরাং তারা অতি সহজেই তাকে পরাভুত করতে সক্ষম হবে। তাই বলা হচ্ছে, আজ এসব লোক রসূলকে (সা) অসহায় ও বন্ধুহীন এবং নিজেদের সংখ্যাধিক্য দেখে ন্যায় ও সত্যের কণ্ঠ স্তদ্ধ করে দিতে দুঃসাহস দেখাচ্ছে।কিন্তু যে সময় সম্পর্কে তাদের সাবধান করে দেয়া হচ্ছে সে দুঃসময়টি যখন আসবে, তখন তারা বুঝতে পারবে প্রকৃত পক্ষে অসহায় ও বন্ধুহীন কারা।

25.) বলো,আমি জানি না , যে জিনিসের প্রতিশ্রুতি তোমাদের দেয়া হচ্ছে তা নিকটে , না তার জন্য আমার রব কোন দীর্ঘ মেয়াদ স্থির করছেন। ২৫

<span> </span>


২৫ )বর্ণনাভংগী থেকেই বুঝা যায়, এটি একটি প্রশ্নের জওয়াব।এখানে প্রশ্নটি উল্লেখ না করে শুধু তার জবাব দেয়া হয়েছে। সম্ভবত ওপরে উল্লেখিত কথা শুনে বিরোধীরা বিদ্রুপের ভঙ্গীতে প্রশ্ন করে থাকবে যে , যে সময়ের ভয় তিনি দেখাচ্ছেন সে সময়টি কখন আসবে? তার জবাবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, তাদের বলো, সে সময়টি আগমণ তো নিশ্চিত ,তবে তার আগমণের দিনক্ষণ আমাকে জানানো হয়নি। সে সময়টি অতি আসন্ন , না তার জন্য দীর্ঘ সময় নির্দিষ্ট রয়েছে তা একমাত্র আল্লাহ তা"আলাই জানেন।

No comments:

Post a Comment