২১৮. আর এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই যে, যারা ঈমান এনেছে এবং আল্লাহর পথে হিজরত (বাড়ি-ঘর ত্যাগ) করেছে (১) ও জিহাদ (লড়াই) করেছে (২) তারা সংগতভাবেই আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। আর আল্লাহ তাদের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে দেবেন এবং তাদের প্রতি নিজের করুণাধারা বর্ষণ করবেন।
১. মহান আল্লাহ তা’লা আল-কুরআনের অন্যত্র বলেন:
যে কেউ আল্লাহর পথে হিজরত করে, সে এর বিনিময়ে পৃথিবীতে আশ্রয়লাভের অনেক স্থান ও সচ্ছলতা প্রাপ্ত হবে। যে নিজ গৃহ থেকে আল্লাহ ও রাসূলের দিকে হিজরত করার উদ্দেশ্যে বের হয়, অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তার প্রতিদান দেয়া আল্লাহর জন্য অবধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়।
সূরা আন-নিসা: ১০০
২. ‘জিহাদ’ অর্থ হচ্ছে, কোন উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনে নিজের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা (utmost endeavour) চালিয়ে যাওয়া। এটি নিছক যুদ্ধের সমার্থক কোন শব্দ নয়। যুদ্ধের জন্য আরবীতে ‘কিতাল’ (রক্তপাত) শব্দ ব্যবহার করা হয়। জিহাদের অর্থ তার চেয়ে অনেক ব্যাপক। সব রকমের প্রচেষ্টা ও সাধনা এর অন্তর্ভুক্ত। জিহাদে তৎপর তথা ‘মুজাহিদ’ এমন এক ব্যক্তিকে বলা হয়, যে সারাক্ষণ নিজের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনে নিমগ্ন, যার মস্তিস্ক সবসময় ঐ উদ্দেশ্য সম্পাদনের উপায় ও কৌশল উদ্ভাবনে ব্যস্ত। যার কন্ঠ ও লেখনী নিজের উদ্দেশ্যের প্রচারণায় নিয়োজিত। যার হাত, পা ও শরীরের প্রতিটি অংগ প্রত্যংগ জিহাদের উদ্দেশ্য সম্পাদনের জন্য সারাক্ষন প্রচেষ্টা, সাধনা ও পরিশ্রম করে চলছে। জিহাদের উদ্দেশ্য পূর্ণ করার জন্য সে নিজের সম্ভাব্য সব উপায়-উপকরণ নিয়োগ করে, পূর্ণ শক্তি দিয়ে এই পথের সব বাধার মোকাবিলা করে, ধৈর্য ধারণ করে, অবিচল-অটুট থাকে, এমনকি শেষ পর্যন্ত যখন প্রাণ উৎসর্গ করার প্রয়োজন দেখা দেয় তখন নির্দ্বিধায় এগিয়ে যায়। এর নাম ‘জিহাদ’।
আর আল্লাহর পথে জিহাদ হচ্ছে: এ সবকিছু একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করতে হবে। ‘এই দুনিয়ায় একমাত্র আল্লাহর দীন তথা আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান প্রতিষ্ঠিত হবে এবং আল্লাহর বাণী ও বিধান পৃথিবীর আর সব মতবাদ, চিন্তাধারা ও বিধানের উপর বিজয় লাভ করবে’ – মুজাহিদের সামনে এ ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকবে না।
No comments:
Post a Comment