সুরা বাকারা : ১৯৬ থেকে ২০৩ (হজ্জ্ব ও উমরা সংশ্লিষ্ট বিধানসমূহ)

196) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যখন হজ্জ ও উমরাহ করার নিয়ত করো তখন তা পূর্ণ করো ৷ আর যদি কোথাও আটকা পড়ো তাহলে যে কুরবানী তোমাদের আয়ত্বাধীন হয় তাই আল্লাহর উদ্দেশ্যে পেশ করো ৷(২০৯) আর কুরবানী তার নিজের জায়গায় পৌছে না যাওয়া পর্যন্ত তোমরা নিজেদের মাথা মুণ্ডন করো না ৷ (২১০) তবে যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত হয় অথবা যার মাথায় কোন কষ্ট থাকে এবং সেজন্য মাথা মুণ্ডন করে তাহলে তার ‘ফিদিয়া’ হিসেবে রোযা রাখা বা সাদকা দেয়া অথবা কুরবানী করা উচিত ৷ (২১১) তারপর যদি তোমাদের নিরাপত্তা অর্জিত হয় (২১২) ( এবং তোমরা হজ্জের আগে মক্কায় পৌছে যাও ) তাহলে তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি হজ্জের সময় আসা পর্যন্ত উমরাহর সুযোগ লাভ করে সে যেন সামর্থ অনুযায়ী কুরবানী করে ৷ আর যদি কুরবানীর যোগাড় না হয়, তাহলে হজ্জের যামানায় তিনটি রোযা এবং সাতটি রোযা ঘরে ফিরে গিয়ে, এভাবে পুরো দশটি রোযা যেন রাখে ৷ এই সুবিধে তাদের জন্য যাদের বাড়ী-ঘর মসজিদে হারামের কাছাকাছি নয় ৷ (২১৩) আল্লাহর এ সমস্ত বিধানের বিরোধিতা করা থেকে দূরে থাকো এবং ভালোভাবে জেনে নাও আল্লাহ কঠিন শাস্তি প্রদানকারী ৷

_______________________________________________________


২০৯ . অর্থাৎ পথে যদি এমন কোন কারণ দেখা দেয় যার ফলে সামনে এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং বাধ্য হয়ে পথেই থেমে যেতে হয় তাহলে উট, গরু, ছাগলের মধ্য থেকে যে পশুটি পাওয়া সম্ভব হয় সেটি আল্লাহর জন্য কুরবানী করো৷

২১০ . কুরবানী তার নিজের জায়গায় পৌছে যাওয়ার অর্থ কি? এ ব্যাপারে বিভিন্ন মত প্রকাশ করা হয়েছে৷ হানাফী ফকীহদের মতে এর অর্থ হচ্ছে হারাম শরীফ৷ অর্থাৎ হজ্জযাত্রী যদি পথে থেমে যেতে বাধ্য হয় তাহলে নিজের কুরবানীর পশু বা তার মূল্য পাঠিয়ে দেবে এবং তার পক্ষ থেকে হারাম শরীফের সীমানার মধ্যে কুরবানী করতে হবে৷ ইমাম মালিক (র) ও ইমাম শাফেঈর (র) মতে হজ্জযাত্রী যেখানে আটক হয়ে যায় সেখানে কুরবানী করে দেয়াই হচ্ছে এর অর্থ৷ মাথা মুণ্ডন করার অর্থ হচ্ছে, মুথার চুল চেঁছে ফেলা৷ অর্থাৎ কুরবানী না হওয়া পর্যন্ত মাথার চুল চেঁছে ফেলতে পারবে না৷

২১১ . হাদীস থেকে জানা যায়, এ অবস্থায় নবী সালআল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিন রোযা রাখা বা ছয়জন মিসকিনকে আহার করানো অথবা কমপক্ষে একটি ছাগল যবেহ করার নির্দেশ দিয়েছেন৷

২১২ . অর্থাৎ যে কারণে পথে তোমাদের বাধ্য হয়ে থেমে যেতে হয়েছিল সে কারণ যদি দূর হয়ে যায়৷ যেহেতু সে যুগে ইসলাম বৈরী গোত্রদের বাধা দেয়ার ফলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে হজ্জের পথ বন্ধ হয়ে যেতো এবং হাজীদের পথে থেমে যেতে হতো, তাই আল্লাহ ওপরের আয়াতে ''আটকা পড়ো'' এবং তার মোকাবিলায় '' নিরাপত্তা অর্জিত হয়'' শব্দ ব্যবহার করেছেন৷ কিন্তু ''আটকা পড়া''র মধ্যে যেমন শত্রুর বাধা দেয়া ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার সাথে সাথে অন্যান্য যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অর্থও অন্তরভূক্ত হয় তেমনি ''নিরাপত্তা অর্জিত হয়'' শব্দের মধ্যে যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে যাবার অর্থ অন্তরভূক্ত হয়৷


২১৩ . জাহেলী যুদ্ধে আরবের লোকেরা ধারণা করতো, একই সফরে হজ্জ ও উমরাহ দু'টো সম্পন্ন করা মহাপাপ৷ তাদের মনগড়া শরীয়াতী বিধান অনুযায়ী হজ্জের জন্য একটি সফর এবং উমরাহর জন্য আর একটি সফল করা অপরিহার্য ছিল৷ মহান আল্লাহ তাদের আরোপিত এই বাধ্য-বাধকতা খতম করে দেন এবং বাইর থেকে আগমনকারীদেরকে এই সফরে হজ্জ ও উমরাহ করার সুবিধে দান করে৷ তবে যারা মক্কার আশেপাশের মীকাতের (যে স্থান থেকে হজ্জযাত্রীকে ইহরাম বাঁধতে হয়) সীমার মধ্যে অবস্থান করে তাদেরকে এই সুযোগ দেয়া হয়নি৷ কারণ তাদের পক্ষে হজ্জ ও উমরাহর জন্য পৃথক পৃথক সফল করা মোটেই কঠিন কাজ নয়৷

হজ্জের সময় আসা পর্যন্ত উমরাহর সুযোগ লাভ করার অর্থ হচ্ছে, উমরাহ সম্পন্ন করে ইহরাম খুলে ফেলতে হবে এবং ইহরাম থাকা অবস্থায় যেসব বিধিনিষেধ মেনে চলতে হচ্ছিল সেগুলো থেকে মুক্ত হয়ে যাবে৷ তারপর হজ্জের সময় এলে আবার নতুন করে ইহরাম বেঁধে নেবে৷
_______________________________________________________



197) হজ্জের মাসগুলো সবার জানা ৷ যে ব্যক্তি এই নিদিষ্ট মাসগুলোতে হজ্জ করার নিয়ত করে, তার জেনে রাখা উচিত, হজ্জের সময়ে সে যেন যৌন সম্ভোগ ,(২১৪) দুষ্কর্ম (২১৫) ও ঝগড়া –বিবাদে (২১৬) লিপ্ত না হয় ৷ আর যা কিছু সৎকাজ তোমরা করবে আল্লাহ তা জানেন ৷ হজ্জ সফরের জন্য পাথেয় সংগে নিয়ে যাও আর সবচেয়ে ভালো পাথেয় হচ্ছে তাকওয়া ৷ কাজেই হে বুদ্ধিমানেরা ! আমার নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকো ৷ (২১৭)

_______________________________________________________


২১৪ . ইহরাম বাঁধা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কেবলমাত্র যৌন সম্পর্কই নিষিদ্ধ নয় বরং যৌন সম্ভোগের প্রতি আকৃষ্ট করতে পারে এমন কোন কথাবার্তাও তাদের মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়৷

২১৫ . যদিও সাধারণ অবস্থায়ই যে কোন গোনাহের কাজ করা অবৈধ কিন্ত ইহরাম বাঁধা অবস্থায় এ কাজগুলো সংঘটিত হলে তার গোনাহের মাত্রা অনেক বেশী কঠিন হয়ে পড়ে৷

২১৬ . এমনকি চাকরকে ধমক দেয়াও জায়েয নয়৷

২১৭ . জাহেলী যুগে হজ্জের জন্য পাথেয় সংগে নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়াকে দুনিয়াদারীর কাজ মনে করা হতো৷ একজন ধর্মীয় ব্যক্তি সম্পর্কে আশা করা হতো সে দুনিয়ার কোন সম্বল না নিয়ে আল্লাহর ঘরের দিকে রওয়ানা হবে৷ এ আয়াতে তাদের এ ভূল চিন্তার প্রতিবাদ করা হয়েছে৷ তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে, পাথেয় না নিয়ে সফর করার মধ্যে মাহাত্ম নেই৷ আসল মাহাত্ম হচ্ছে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি হওয়া তাঁর বিধি-নিষেধের বিরুদ্ধাচরণ করা থেকে বিরত থাকা এবং জীবনকে পবিত্র, পরিচ্ছন্ন ও কলুষ মুক্ত করা৷ যে ব্যক্তি সৎচারিত্রিক গুণাবলী নিজের মধ্যে সৃষ্টি করে সে অনুযায়ী নিজের চরিত্রকে নিয়ন্ত্রিত করেনি এবং আল্লাহর ভয়ে ভীত না হয়ে অসৎকাজ করতে থাকে, সে যদি পাথেয় সংগে না নিয়ে নিছক বাহ্যিক ফকীরী ও দরবেশী প্রদর্শনী করে বেড়ায়, তাহলে তাতে তার কোন লাভ নেই৷ আল্লাহ ও বান্দা উভয়ের দৃষ্টিতে সে লাঞ্ছিত হবে৷ যে ধর্মীয় কাজটি সম্পন্ন করার জন্য সে সফর করছে তাকেও লাঞ্ছিত করবে৷ কিন্তু তার মনে যদি আল্লাহর প্রতি ভয় জাগরুক থাকে এবং তার চরিত্র নিষ্কলুষ হয় তাহলে আল্লাহর ওখানে সে মর্যাদার অধিকারী হবে এবং মানুষও তাকে মর্যাদার দৃষ্টিতে দেখবে৷ তার খাবারের থলিতে খাবার ভরা থাকলেও তার এ মর্যাদার কোন কম-বেশী হবে না৷

_______________________________________________________


198) আর হজ্জের সাথে সাথে তোমরা যদি তোমাদের রবের অনুগ্রহের সন্ধান করতে থাকো তাহলে তাতে কোন দোষ নেই ৷ (২১৮) তারপর আরাফাত থেকে অগ্রসর হয়ে ‘মাশআরুর হারাম’ (মুয্দালিফা) এর কাছে থেমে আল্লাহকে স্মরণ করো এবং এমনভাবে স্মরণ করো যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ নয়তো ইতিপূর্বে তোমরা তো ছিলে পথভ্রষ্টদের অন্তরভুক্ত ৷ (২১৯)

_______________________________________________________


২১৮ . এটিও প্রাচীন আরবের একটি জাহেলী ধারণা ছিল৷ হজ্জ সফর কালে অর্থ উপার্জনের জন্য কোন কাজ করা তারা খারাপ মনে করতো৷ কারণ তাদের মতে, অর্থ উপার্জন করা একটি দুনিয়াদারীর আজ৷ কাজেই হজ্জের মত একটি ধর্মীয় কাজের মধ্যে এ দুনিয়াদারীর কাজটি করা তাদের চোখে নিন্দনীয়ই ছিল৷ কুরআন এ ধারণার প্রতিবাদ করছে এবং তাদের জানিয়ে দিচ্ছে, একজন আল্লাহ বিশ্বাসী ব্যক্তি যখন আল্লাহর আইনের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করে নিজেদের অর্থ উপার্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালায় তখন আসলে সে আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করে৷ কাজেই এক্ষেত্রে সে যদি আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জনের জন্য সফর করতে গিয়ে তার মাঝখানে তাঁর অনুগ্রহের সন্ধানও করে ফেলে, তাহলে তার কোন গোনাহ হবে না৷

২১৯ . অর্থাৎ জাহেলী যুগে আল্লাহর ইবাদাতের সাথে অন্য যে সমস্ত মুশরিকী ও জাহেলী ক্রিয়া কর্মের মিশ্রণ ঘটেছিল সেগুলো পরিহার করো এবং এখন আল্লাহ যে সমস্ত হিদায়াত তোমাদের দান করেছেন সে অনুযায়ী নির্ভেজাল আল্লাহর ইবাদাতের পথ অবলম্বন করো৷



_______________________________________________________


199) তারপর যেখান থেকে আর সবাই ফিরে আসে তোমরাও সেখান থেকে ফিরে এসো এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও ৷ (২২০) নিসন্দেহে তিনি ক্ষমাশীল ও করুণাময় ৷
_______________________________________________________

২২০ . হযরত ইবরাহীম (আ) ও হযরত ইসমাঈল (আ)-এর সময় আরবে হজ্জের সাধারণ প্রচলিত পদ্ধতি ছিল এই যে, ৯ই যিলহজ্জ তারা মিনা থেকে আরাফাত যেতো এবং ১০ তারিখের সকালে সেখান থেকে ফিরে এসে মুযদালিফায় অবস্থান করতো৷ কিন্তু পরবর্তী কালে যখন ধীরে ধীরে ভারতীয় ব্রাহ্মণদের ন্যায় আরবে কুরাইশদের ধর্মীয় প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলো তখন তারা বললো, আমরা হারাম শরীফের অধিবাসী, সাধারন আরবদের সাথে আমরা আরাফাত পর্যন্ত যাবো, এটা আমাদের জন্য মর্যাদাহানিকর৷ কাজেই তারা নিজেদের জন্য পৃথক মর্যাদাজনক ব্যবস্থার প্রচলন করলো৷ তারা মুযদালিফা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসতে এবং সাধারণ লোকদের আরাফাত পর্যন্ত যাবার জন্য ছেড়ে দিতো৷ পরে বনী খুযাআ ও বনী কিনানা গোত্রদ্বয় এবং কুরাইশদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য গোত্রও এই পৃথক অভিজাতমূলক ব্যবস্থার অধিকারী হলো৷ অবশেষে সাধারণ আরবদের তুলনায় অনেক উঁচু হলে গেলো৷ তারাও আরাফাতে যাওয়া বন্ধ করে দিল৷ এ গর্ব ও অহংকারের পুত্তলিটিকে এ আয়াতে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেয়া হয়েছে৷ এ আয়াতে বিশেষভাবে সম্বোধন করা হয়েছে কুরাইশ, তাদের আত্মীয় ও চুক্তি বদ্ধ গোত্রগুলোকে এবং সাধারণভাবে সম্বোধন করা হয়েছে এমন সব লোকদেরকে যারা আগামীতে কখনো নিজেদের জন্য এ ধরনের পৃথক ব্যবস্থা প্রচলনের আকাংখা মনে মনে পোষণ করে৷ তাদের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে,সবাই যতদূর পর্যন্ত যায় তোমরাও তাদের সাথে ততদূর যাও তাদের সাথে অবস্থান করো, তাদের সাথে ফিরে এসো এবং এ পর্যন্ত জাহেলী অহংকার ও আত্মম্ভিরতার কারণে, তোমরা সুন্নাতে ইবরাহিমীর যে বিরুদ্ধাচরণ করে এসেছো সে জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমতা প্রার্থনা করো৷

_______________________________________________________

200) অতপর যখন তোমরা নিজেদের হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করবে তখন আল্লাহকে এমনভাবে স্মরণ করবে যেমন ইতিপূর্বে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে স্মরণ করতে (২২১) বরং তার চেয়ে অনেক বেশী করে স্মরণ করবে ৷ (তবে আল্লাহকে স্মরণকারী লোকদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে) তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় সবকিছু দিয়ে দাও ৷ এই ধরনের লোকের জন্য আখেরাতে কোন অংশ নেই ৷

_______________________________________________________

২২১ . ইতিপূর্বে আরবের লোকেরা হজ্জ শেষ করার পর পরই মিনায় সভা করতো৷ সেখানে প্রত্যেক গোত্রের লোকেরা তাদের বাপ-দাদাদের কৃতিত্ব আলোচনা করতো৷ গর্ভ ও অহংকারের সাথে এবং এভাবে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের বড়াই করতো৷ তাদের এ কার্যকলাপের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে, এসব জাহেলী কথাবার্তা বন্ধ করো, ইতিপূর্বে আজেবাজে কথা বলে যে সময় নষ্ট করতে এখন আল্লাহর স্মরণে ও তাঁর যিকিরে তা অতিবাহিত করো৷ এখানে যিকির বলতে মিনায় অবস্থানরত সময়ে যিকিরের কথা বলা হয়েছে ৷

_______________________________________________________



201) আবার কেউ বলে, হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়ায় কল্যাণ দাও এবং আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং আগুনের আযাব থেকে আমাদের বাঁচাও ৷


202) এই ধরনের লোকেরা নিজেদের উপার্জন অনুযায়ী (উভয় স্থানে )অংশ পাবে ৷ মূলত হিসেব সম্পন্ন করতে আল্লাহর একটুও বিলন্ব হয় না ৷


203) এই হাতেগোণা কয়েকটি দিন, এ দিন ক’টি তোমাদের আল্লাহর স্মরণে অতিবাহিত করতে হবে ৷ যদি কেউ তাড়াতাড়ি করে দু’দিনে ফিরে আসে, তাতে কোন ক্ষতি নেই ৷ আর যদি কেউ একটু বেশীক্ষণ অবস্থান করে ফিরে আসে তবে তাতেও কোন ক্ষতি নেই ৷ (২২২) তবে শর্ত হচ্ছে, এই দিনগুলো তাকে তাকওয়ার সাথে অতিবাহিত করতে হবে ৷ আল্লাহর নাফরমানী করা থেকে বিরত থাকো এবং খুব ভালোভাবে জেনে রাখো, একদিন তাঁর দরবারে তোমাদের হাযির হতে হবে ৷

_______________________________________________________


২২২ . অর্থাৎ 'আইয়ামে তাশরীকে' মিনা থেকে মক্কার দিকে ১২ই বা ১৩ যিলহজ্জ যেদিনেই ফিরে আসা হোক না কেন তাতে কোন ক্ষতি নেই৷ কতদিন অবস্থান করা হয়েছিল, এটা কোন মৌলিক গুরুত্বের বিষয় নয়৷ বরং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই যে, যতদিন অবস্থান করা হয়েছিল, সেই দিনগুলোয় আল্লাহর সাথে তোমাদের সম্পর্ক কেমন ছিল? সেই দিনগুলোয় তোমরা আল্লাহর যিকিরে মশগুল ছিলে, না মেলা দেখে আর উৎসব অনুষ্ঠানে ফূর্তি করে দিন কাটিয়ে দিয়েছো?

No comments:

Post a Comment