(সুরা জ্বিন:৮-১৪): হঠাৎ মহাশূণ্য উল্কাপিন্ডের প্রহরীবেষ্টিত কেন তার কারন অনুসন্ধান করতে-ই জ্বীনরা বেরিয়ে পড়ে কুরআন শুনে ফেলেছিলো



৮) আর “আমরা আসমানে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি, তা কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা পরিপুর্ণ ৷”  


৯) আর "ইতিপূর্বে আমরা ছিঁটেফোটা কিছু আড়ি পেতে শোনার জন্য আসমানে বসার জায়গা পেয়ে যেতাম৷ কিন্তু এখন কেউ গোপনে শোনার চেষ্টা করলে সে তার নিজের বিরুদ্ধে নিক্ষেপের জন্য একটি উল্কা নিয়োজিত দেখতে পায়৷" ৯  


৯ . এটাই সে কারণ যার ভিত্তিতে জিনরা এ বিষয়টি অনুসন্ধান করতে বেরিয়েছিল যে, পৃথিবীতে এমন কি ঘটনা ঘটেছে বা ঘটতে যাচ্ছে যার খবরাখবর সুরক্ষিত করার জন্য এমন কঠোর ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে এখন আমরা উর্ধ জগতের কোন খবর জানার সুযোগ পাই না এবং যেখানেই যাই আমাদের মেরে তাড়িয়ে দেয়া হয়৷

১০) আর আমাদের বোধগম্য হচ্ছিল না যে, পৃথিবীবাসীদের সাথে কোন খারাপ আচরণ করার সংকল্প করা হয়েছে, নাকি তাদের প্রভু, তাদেরকে সঠিক পথ দেখাতে চান? ১০  


১০ . এ থেকে জানা গেল যে, দুটি পরিস্থিতিতে উর্ধ জগতে এ ধরনের অসাধারণ ব্যবস্থাদি গৃহীত হয়ে থাকে৷ এক, আল্লাহ যদি পৃথিবীবাসীদের ওপর কোন আযাব নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন এবং চান যে তা নাযিল হওয়ার আগে জিনরা তার পূর্বাভাবস পেয়ে তাদের মানুষ বন্ধুদের সাবধান করে না দিক৷  দুই, আল্লাহ যদি পৃথিবীতে কোন রসূল পাঠিয়ে থাকেন এবং তাঁর কাছে যেসব হিদায়াত ও বাণী পাঠানো হচ্ছে তাতে শয়তানরা যাতে কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করতে না পারে এবং রসূলের কাছে কি কি হিদায়াত বা বানী পাঠানো হচ্ছে তা আগেভাবেই জেনে নিতে না পারে তার নিরাপত্তা ও সংরক্ষণ কাম্য হয় তখন এ ধরনের অসাধারণ ব্যবস্থাটি গ্রহীত হয়৷ সুতরাং জিনদের একথাটির অর্থ হলো, আমরা যখন আসমানে এরূপ কঠোর প্রহরা দেখলাম এবং অজস্র উল্কা বর্ষণ লক্ষ করলাম তখন এ দুটি অবস্থার কোনটি সংঘটিত হচ্ছে আমাদের মধ্যে তা জানার উদ্বেগ সৃষ্টি হলো৷ আল্লাহ তা"আলা কি হঠাৎ করে পৃথিবীর কোন জাতির ওপর আযাব নাযিল করেছেন না কোন এলাকায় কোন রসূল পাঠিয়েছেন? এ বিষয়টি অনুসন্ধানেই আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম৷ এরি এক পর্যায়ে আমরা এ বিস্ময়কর বাণী শুনতে পেলাম যা সত্য ও সঠিক পথের সন্ধান দান করে৷ এভাবে আমরা জানতে পেরেছি, আল্লাহ কোন আযাব নাযিল করেননি৷ বরং তারঁ সৃষ্টি সত্য ও সঠিক পথ দেখানোর জন্য একজন রসূল পাঠিয়েছেন<span>৷ (অধিক ব্যাখ্যার জন্য দেখুন, তাফহীমুল কোরআন, সূরা আল হিজর, টীকা ৮ থেকে ১২; সূরা সাফ্ফাত , টীকা ৭ এবং সূরা আল মুলক টীকা ১১)</span>


১১) আর আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক আছে নেককার আর কিছু লোক আছে তার চেয়ে নীচু পর্যায়ের৷ এভাবে আমরা বিভিন্ন মতে বিভক্ত ১১   ছিলাম৷

 
১১ . অর্থাৎ আমাদের মধ্যে নৈতিক চরিত্রের দিক থেকেও ভাল ও মন্দ দু"প্রকারের জিন আছে এবং আকীদা -বিশ্বাসের দিক থেকেও মত ও পথ একটি নয়৷ এ ক্ষেত্রেও আমরা বিভিন্ন দল ও গোষ্ঠীতে বিভক্ত৷ একথা বলে ঈমান আনয়নকারী এসব জিন নিজ জাতির জিনদের বুঝাতে চাচ্ছিল যে, নিসন্দেহে আমরা সত্যও সঠিক পথ খুঁজে বের করার মুখাপেক্ষী৷এর প্রয়োজনীয়তা আমরা অস্বীকার করতে পারি না৷


১২) আর আমরা মনে করতাম যে, আমরা পৃথিবীতে আল্লাহকে অক্ষম করে দিতে সক্ষম নই এবং পালিয়েও তাঁকে পরাভূত করতে পারবো না৷ ১২ 


১২ . অর্থাৎ আমাদের এ ধারণাই আমাদের মুক্তির পথ দেখিয়েছে৷ আমরা যেহেতু আল্লাহ সম্পর্কে নির্ভয় বা বেপরোয়া ছিলাম না এবং এ ব্যাপারে আমাদের নিশ্চিত বিশ্বাস ছিল যে, যদি আমরা তাঁর অবাধ্য হই তাহলে তাঁর পাকড়াও থেকে কোন অবস্থায়ই বাঁচতে পারবো না৷ তাই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সত্য ও সঠিক পথ প্রদর্শনকারী বাণী শুনে ন্যায় ও সত্যকে জানার পরও অজ্ঞ ও নির্বোধ লোকদের প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত আকীদা-বিশ্বাসকেই আঁকড়ে থাকার দুঃসাহস আমরা দেখাইনি৷

১৩) আর আমরা যখন হিদায়াতের বানী শুনলাম তখন তার প্রতি ঈমান আনলাম ৷ যে ব্যক্তিই তার রবের ওপর ঈমান আনবে তার অধিকার বিনষ্ট হওয়ার কিংবা অত্যাচারিত হওয়ার ভয় থাকবে না৷ ১৩  


১৩ . অধিকার বিনষ্ট হওয়ার অর্থ হলো, নেক কাজের জন্য যতটা পারিশ্রমিক বা পুরস্কার পাওয়ার কথা তার চাইতে কম দেয়া৷ আর জুলুম বা অত্যাচার হলো নেক কাজের জন্য আদৌ কোন পারিশ্রমিক বা পুরষ্কার না দেয়া এবং তার দ্বারা এ ত্রুটি বা অপরাধ হয়েছে তার তুলনায় অধিক শাস্তি দেয়া, কিংবা অপরাধ ছাড়াই কাউকে শাস্তি দেয়া৷ আল্লাহ তা"আলার দরবারে কোন ঈমানদারের প্রতি এ ধরনের কোন বেইনসাফী হওয়ার আশংকা থাকবে না৷


১৪) আর আমাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক আছে মুসলমান (আল্লাহর আনুগত্যকারী) আর কিছু সংখ্যক লোক আছে ন্যায় ও সত্য থেকে বিমুখ৷ তবে যারা ইসলাম (আনুগত্যের পথ) গ্রহণ করেছে তারা মুক্তির পথ খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছে৷

No comments:

Post a Comment